এবিএনএ: তাইওয়ানের ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্মকর্তারা বলছেন। আহত হয়েছে আরো ৭১১ জন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ৭৭ জন আটকা পড়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বলেছেন, উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে স্থানীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে চীনা কর্তৃপক্ষ ভূমিকম্পের পরপরই একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, তারা এই দুর্যোগে ত্রাণ সহায়তা দিতে ইচ্ছুক। চীনের পূর্ব উপকূল তাইওয়ান থেকে মাত্র ১৮০ কিলোমিটার (১১১ মাইল) দূরে অবস্থিত। স্টেট কাউন্সিলের তাইওয়ান অ্যাফেয়ার্স অফিসের মুখপাত্র ঝু ফেংলিয়ান বলেছেন, ‘মূল ভূখণ্ড পরিস্থিতি নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি আন্তরিক সহানুভূতি প্রকাশ করেছে।’ এর আগে তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে ৭.৫ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাজধানী তাইপেইতে অবস্থিত ভবনগুলো শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপছে। তাইওয়ানের পাহাড়ি অঞ্চলও শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, ভূমিকম্পে বিশাল ভূমিধস হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি থেকে সেরে উঠতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তরা।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর ফুটেজে দেখা গেছে, ধসে পড়া আবাসিক ভবন, বাড়ি ও স্কুল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় সম্প্রচারকারী টিভিবিএস-এর ভিডিও অনুসারে, ভূমিকম্পে যানবাহনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইন্টারনেট মনিটরিং গ্রুপ ‘নেটব্লক’ অনুসারে, দ্বীপটি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং ইন্টারনেট বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে প্রতিবেশী জাপানের কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছিল, ৩ মিটার পর্যন্ত সুনামির ঢেউ এর দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের বিশাল এলাকায় আঘাত হানতে পারে। তবে জাপানের আবহাওয়া সংস্থা পরে এই সতর্কতা তুলে নেয় এবং বাসিন্দাদের প্রায় এক সপ্তাহ পরবর্তী আফটারশকের জন্য সতর্ক থাকতে বলে।
ফিলিপাইনের সিসমোলজি এজেন্সিও ভূমিকম্পের পরপরই সুনামির সতর্কতা জারি করে। বাসিন্দাদের উঁচু স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানায়। প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কীকরণ কেন্দ্র ভূমিকম্পের প্রায় দুই ঘণ্টা পর জানায়, সুনামির হুমকি এখন কেটে গেছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, চীনের দক্ষিণ-পূর্ব ফুজিয়ান প্রদেশের কিছু অংশে কম্পন অনুভূত হয়েছে। তাইপেইয়ের সিসমোলজি সেন্টারের পরিচালক উ চিয়েন ফু বলেছেন, ‘সমগ্র তাইওয়ান এবং উপকূলীয় দ্বীপগুলোতে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়… যা ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল।’ ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাইওয়ানে ৭.৬-মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ লোক মারা যায় এবং পাঁচ হাজার ভবন ধ্বংস হয়ে যায়।